আম্মু তুমি আয়ুশ আঙ্কেলের সাথে শুয়ে কি করছো?
নিজের সাত বছরের মেয়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ধরফড় করে বিছানা থেকে উঠে পড়লো অর্পা।

তুতুল তুমি এখানে কি করছো মা,যাও নিজের ঘরে যাও।আর এটা তোমার একটা আঙ্কেল।ওর শরীরটা খুব খারাপ তাই রেস্ট নিচ্ছে।

এই বলে তুতুলকে ওর ঘরে পাঠিয়ে দিলো।এরপরে আয়ুশকে এসে বলতে লাগলো

তুমি এখনো কি করছো এখানে শুয়ে শুয়ে,তাড়িতাড়ি বেরিয়ে পড়ো...

আরেকটু সময় থাকি না,

মাথাটা কি খারাপ হয়ে গেছে তোমার,দেখলে না তুতুল আমাদের দুজনকে দেখে ফেলেছে

---তাতে কি?
ও বাচ্চা মেয়ে,এসবের বোঝে নাকি কিছু।চলো আবার শুরু করি!
আমার পক্ষে এখন আর সম্ভব নয়,পরে এসো।

এতো কষ্ট করে এসে এমনি এমনি তো ফিরে যাবো না,আমি আমার পাওনা আদায় করে তারপরেই যাবো।

এই বলে অর্পাকে নিয়ে বিছানার ওপরে শুয়ে পড়লো আয়ুশ।এদিকে ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে তুতুল।নিজের মায়ের গোঙানির আওয়াজ ভেসে আসছে বন্ধ দরজার ভেতর থেকে।হঠাৎ ওর হাত থেকে টেডিবিয়ারটা পড়ে যায়।তারপর মেঝেতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো।আয়ুশ অর্পার প্রাক্তন।তাছাড়া একসাথে দুজন একটা অফিসে চাকরি করতো।অর্পা নিজের চাকরি ছেড়ে দিয়েছে বছরখানেক হয়েছে।

সন্ধ্যাবেলা।
অর্পা তুতুলকে ডেকে বলতে লাগলো
মামনি,তুমি কি রাগ করে আছো আমার ওপর?

---কই না তো?

শোনো আজ বিকেল-বেলা যা দেখেছো তোমার আব্বুকে কিন্তু কিছু বলো না।

---কেনো বললে কি হবে?

বললে তোমার আব্বু আমায় এই বাসা থেকে বের করে দেবে।তখন তোমার আর আমার সাথে থাকা হবে না।

অর্পা নিজের মাকে জড়িয়ে ধরে বললো, না মা আমি তোমার সাথেই থাকতে চাই,তুমি আমায় ছেড়ে কোথাও যাবে না।

তাহলে যা দেখেছে ভুলেও বলো না নিজের বাবার কাছে।কেমন?

আচ্ছা ঠিক আছে।বলবো না।প্রমিজ করলাম।

---এইতো আমার সোনা মেয়ে।

পরেরদিন সকালবেলা।একটা কল আসলো অর্পার কাছে।কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটা আতঙ্কজনক কন্ঠ ভেসে আসে।পরক্ষণেই হাত থেকে মোবাইলটা পড়ে গেলো অর্পার।দ্রুত বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো সে।বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর হয়ে যায়।অর্পা আর ওর হাসবেন্ড রোদ্দুর একরাশ ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।গতকাল বিকেলে আয়ুশের সাথে সুখের এক দীর্ঘ মূহুর্ত পার করেছে অর্পা আর রাতেই কিনা তাকে খু*ন করা হয়েছে এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে অর্পার।আয়ুশের স্ত্রী নিরুদ্দেশ।পুলিশের ধারণা আয়ুশের স্ত্রী এই খুনের সাথে কোনোভাবে জড়িত।তাই তাকে খোঁজার জন্য ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করে দিয়েছে।

বাসায় ফিরে এসে প্রথমেই তুতুলের ঘরে গেলো অর্পা।তুতুল বিছানার ওপরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে।ওর মাথায় খানিকক্ষণ হাত বুলিয়ে দিয়ে অর্পা ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে ঠিক তখন সু কেবিনেটের দিকে চোখ গেলো অর্পার।মনে হচ্ছে পেছনে কিছু একটা লুকানো আছে।অর্পা তুতুলের সুকেবিনেটের পেছন থেকে জিনিসগুলো বের করে আনলো।

আয়ুশের রক্তমাখা একটা শার্ট,এই শার্টটা অর্পাই গিফট করেছিলো আয়ুশকে আর সাথে একটা ধারালো ছুরি।ভয়ে সারা শরীর কেঁপে উঠলো অর্পার।
হায় আল্লাহ!এই জিনিসগুলো তুতুলের কাছে কেনো?

#চলবে_______________ কমেন্ট করে জানিয়ে দেও

#পার্টঃ_১ম_______

image
Like